লিমিটেড কোম্পানি এবং সমাজের বিত্তশালী মানুষ।

এভাবেই তৈরি হয় এক-একটি লিমিটেড কোম্পানি… এবং সমাজের বিত্তশালী মানুষ।

আমার ১ কোটি টাকা আছে, আমি ব্যাংক থেকে আরো ১ কোটি টাকা লোন নিলাম, মোট ২ কোটি টাকা দিয়ে একটা বিস্কুট কোম্পানি বানালাম, এর নাম দিলাম “ABC Limited”।

এবার একটা মার্চেন্ট ব্যাংকে গেলাম, সোনালী ব্যাংকের মার্চেন্ট ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংকের হেড অফ অপারেশনকে বললাম আমার বিস্কুট কোম্পানি ABC Limited কে স্টক এক্সচেঞ্জ এ লিস্টেড করতে চাই।

কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জ এর নিয়ম হচ্ছে মিনিমাম ৪০ কোটি টাকার নিচের কোন পেইড-আপ ক্যাপিটাল এর কোম্পানিকে লিস্টেড করা যায় না, কিন্তু আমার কোম্পানি তো মাত্র ২ কোটি টাকার কোম্পানি!

মার্চেন্ট ব্যাংকের হেড অফ অপারেশন বললেন, “সমস্যা নাই ভাই, আপনার কোম্পানি আমরা লিস্টেড করে দিবো, কিন্তু শর্ত হচ্ছে আপনি আমাকে ৮ কোটি টাকা দিবেন, আমি কষ্ট করবো, আমার পারিশ্রমিক হিসাবে আপনি আমাকে আলাদা ২ কোটি টাকা দিবেন, এইটা আবার আমার ব্যাঙ্ক যেন না জানে, টোটাল ১০ কোটি টাকা”।

আমি জবাব দিলাম, “আমি কিভাবে ১০ কোটি টাকা দিবো!”

মার্চেন্ট ব্যাংকের হেড অফ অপারেশন বললেন, “আপনার নিজের পকেট থেকে এক টাকাও দিতে হবে না, আমরা মার্কেট থেকে আপনাকে টাকা তুলে দিবো, আপনি ওখান থেকে আমাকে ১০ কোটি টাকা দিবেন, আপনি আপনার ৫০ পার্সেন্ট শেয়ার বিক্রি করবেন আর বাকি ৫০ পার্সেন্ট শেয়ার নিজের কাছে রেখে দিবেন”।

আমি ওনার শর্তে রাজি হলাম,
এবার ওই মার্চেন্ট ব্যাংকের হেড অফ অপারেশন অডিট ফার্ম এ গেলো, গিয়ে বললো,”এই ABC Limited স্টক এক্সচেঞ্জ এ লিস্টেড করবো”।

অডিট ফার্ম বললো, “কি করতে হবে শুধু হুকুম করেন”।

হেড অফ অপারেশন বললেন, “বেশি কিছু না, কেবল এই ২ কোটি টাকার কোম্পানিকে ৪০ কোটি টাকা ভ্যালুয়েশন করে দেখাতে হবে”।

অডিট ফার্ম বললো, “কোনো সমস্যা নাই, তবে বস এবার কিন্তু একটু বাড়িয়ে দিতে হবে, স্টাফদের স্যালারি দিয়ে মাস শেষে লোকসান হচ্ছে, এবার ২ কোটি টাকার নিচে পারবো না” শেষ পর্যন্ত নেগোসিয়েশন করে ১ কোটি টাকায় রাজি হলো ২ জন।

এবার হেড অফ অপারেশন সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন চেয়ারম্যান এর পিওনকে ফোন দিল (পিওন ভেবে অর্ডিনারি পিওন ভাবার সুযোগ নাই, এই পিওন বাকি ১০০ টা পিওনের মতো অর্ডিনারি পিওন না, এই পিওন অনেক পাওয়ারফুল)। পিওনকে বল্লো নতুন একটা বিস্কুট কোম্পানি মার্কেটে লিস্টেড করতে হবে, কাজ টা করে দিতে হবে, পিওন বললো, “স্যার কিন্তু এখন ২.২০ কোটি টাকার নিচে কোনো কাজ পাশ করে না, এর নিচে কাজ হবে না, আর জিনিষপাতির দাম বাড়ছে, বউ বাচ্চা নিয়ে না খাওয়ার অবস্থা, মেয়েটার ভার্সিটির বেতন বাকি পড়ছে আমার দিক একটু দেইখেন।”

হেড অফ অপারেশন বললো, “ওকে ডিল ফাইনাল কাজ করে দেন”

হেড অফ অপারেশন এবার স্টক এক্সচেঞ্জ এর টপ লেভেল এ যোগাযোগ করলো, বলল, “এই বিস্কুট কোম্পানি অপ্প্রভ করে দিতে হবে”।

স্টক এক্সচেঞ্জ বললো, “ঠিক আছে কিন্তু ২ কোটি টাকা নিব, এর নিচে হবে না”

২ জনে রাজি হলো, ডিল ফাইনাল।
এবার ২ কোটি টাকার বিস্কুট কোম্পানিকে ৪০ কোটি টাকা দেখিয়ে আইপিওর জন্য এপলাই করা হলো, ৫০ পার্সেন্ট শেয়ার মানে ২০ কোটি টাকার শেয়ার মার্কেট এ ছাড়া হলো, প্রিমিয়াম প্রাইস ৫ টাকা যোগ করে, সো ৩০ কোটি টাকা।

মানে ১ কোটি টাকার অরিজিনাল শেয়ার বিক্রি করে মার্কেট থেকে তোলা হলো ৩০ কোটি টাকা।

এবার আমি আমার কথা মতো ১০ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক এর মার্চেন্ট ব্যাংকের হেড অফ অপারেশনকে বুঝিয়ে দিলাম, আর বাকি টাকা আমার, মানে আমার পকেটে ঢুকলো ২০ কোটি টাকা।

হেড অফ অপারেশন স্টক এক্সচেঞ্জকে ২ কোটি টাকা দিলো, আর স্টক এক্সচেঞ্জ এ যারা আছে তারা এই ২ কোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিলো, অডিট ফার্মকে দিলো আরো ১ কোটি টাকা, আর বাকি টাকা সোনালী ব্যাংক এর কমিশন হিসাবে নিলো, নিজের জন্য বাকি টাকা।

আর ২.২০ কোটি টাকা দিলো সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর চেয়ারম্যান এর পিওনকে, সাথে পিওনের মেয়ের ভার্সিটির বকেয়া বেতন বাবদ দিলে আরো ১০ লক্ষ টাকা।

পিওন তার স্যারকে বলল, “স্যার দুনিয়ায় এখন আর মানুষ নাই, সব অমানুষ হয়ে গেছে, আমাকে বলছিলো ২ কোটি টাকা দিবে কিন্তু ২০ লক্ষ টাকা কম দিছে, আমারে বলছিলো কিছু টাকা দিবে, একটা টাকাও দিলো না স্যার” সে তার স্যারকে ১.৮০ কোটি টাকা দিলো, স্যার পিওনকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে নিজের কাছে ১ কোটি টাকা রেখে বাকি টাকা কয়েকটা খামে ভরে তার কলিগদেরকে পাঠিয়ে দিলো।

এইটুকু পর্যন্ত অনিয়ম আর কারসাজির প্রথম স্টেজ শেষ।

এবার দ্বিতীয় স্টেজ,
ABC Limited মার্কেট এ লিস্টেড হলো আর আইপিও প্রাইস হলো ১৫ টাকা।
ট্রেড শুরু হলো, এক একটা ১৫ টাকার শেয়ার পাবলিক ৫০ টাকা করে বাই করলো।

আমার তো মাথা খারাপ, আমার বাকি অরিজিনাল ১ কোটি টাকার শেয়ার এর মার্কেট ভ্যালু ১০০ কোটি টাকা! আর অলরেডি তো ২০ কোটি টাকা পকেটে ঢুকাইছি, এবার আমি আমার বাকি ৫০ পার্সেন্ট শেয়ার ও বিক্রি করা শুরু করলাম, কিন্তু এতো শেয়ার বিক্রি করবো, পাবলিক তো খাবে না, তাই একাউন্টেন্টকে বললাম, “লাস্ট ৩ মাসের আর্নিং দেখাও ২.৪০ কোটি টাকা লাভ”।

একাউন্টেন্ট বললো, “স্যার, সারা বছর কোম্পানি লাভ করে ১.২০ কোটি টাকা, আর ৩ মাসে কিভাবে ২.৪০ কোটি টাকা লাভ দেখাবো?”

আমি জবাব দিলাম, “ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে কি নকল করে পাশ করছো? ৩ মাসের লাভ দেখাবা ২.৪০ কোটি টাকা, এরপরের ৯ মাসের আর্নিং এ ১.২০ কোটি টাকা লস দেখিয়ে এডজাস্ট করে দিবা, সোজা হিসাব।”

মাত্র ১ পিস্ শেয়ার মানে ১০ টাকার একটা শেয়ার কেবল নিজের কাছে রাখলাম, আর বাকি সব শেয়ার বিক্রি করে দিলাম, নিজের পকেট এ ঢুকলাম আরো ১০০ কোটি।

পাব্লিকের থেকে খাওয়ার আর কিছু নাই,
এবার কোম্পানি ফোকাস করা শুরু করলাম,
ABC Limited প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা প্রফিট করছে।
কোম্পানির এম.ডি. এবং চেয়ারম্যান এর স্যালারী ধরলাম ৫০ লক্ষ টাকা।

লিমিটেড কোম্পানি গঠন করেই ব্যবসা শুরু করা প্রয়োজন কেন?

লিমিটেড কোম্পানি গঠন করেই ব্যবসা শুরু করা একান্ত প্রয়োজনীয় কেন? আমি মনে করি যেকোন নতুন উদ্যোক্তা এবং সাধারণ ব্যবসায়ী ইচ্ছে করলেই তার ব্যবসা শুরু করার পূর্বেই জয়েন্ট স্টক এর মাধ্যমে 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝 কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করেই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

কারণঃ শুধুমাত্র একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যবসা শুরু করার পরও দীর্ঘদিন কঠিন পরিশ্রম করে ব্যবসাটি দাঁড় করানোর পর দেখা যায়, ব্যবসা রিলেটেড বিভিন্ন ধরনের কাগজ-পত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে যেকোনো প্রয়োজনে ব্যবসাটি প্রাইভেট 𝐋𝐢𝐦𝐢𝐭𝐞𝐝 কোম্পানি রেজিস্ট্রেশ করার প্রয়োজন দেখা দেয়।

কিন্তু ততক্ষণে অন্য কেউ উক্ত নামের রেজিষ্ট্রেশন গ্রহণ করে নিয়ে যেতে পারে এবং আপনি কোম্পানি করার সুযোগ নাও পেতে পারেন, কারন ততদিনে অন্য কেও কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছে।

✅ লিমিটেড কোম্পানীর লাইসেন্স এর সুবিধাঃ
✅ কোম্পানির বৃহদায়তন উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
✅ কোম্পানির প্রতি জনগণের আস্থা বেশি থাকে।
✅ কোম্পানির চিরন্তন অস্তিত্ব থাকে।
✅ যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে দেশের সকল জায়গায় আপনার প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
✅ এছাড়া বিনিয়োগকারী পেয়ে যাবেন খুব সহজে যদি আপনার লিমিটেড কোম্পানির লাইসেন্স থেকে থাকে।
✅ যেমন ব্যাংক লোণ পেতে, প্রোজেক্ট লোণ পেতে, সামাজিক মর্যাদার ক্ষেত্রে, সাপ্লাই বা টেন্ডার আবেদনে সুবিধা, ব্যক্তি বা অন্যান্য কোম্পানি থেকে বিনিয়োগ পেতে সুবিধা, আন্তর্জাতিক পরিচয়ের ক্ষেত্রে, দেশব্যপি সম্মানের সাথে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ইত্যাদি।
✅ বিনিয়োগকারীরাও আপনার কোম্পানিতে বা প্রতিষ্ঠানে অর্থ প্রদান করতে উৎসাহিত হবে। এতে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি করে, ব্যবসার মাধ্যমে অধিক লভ্যাংশ এবং ব্যবসাকে বড় করে বৃদ্ধি করে পরিবর্তন করতে পারবেন দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থারও।

এখনি সুযোগ ব্যবসায়িক কম্পিটিটরদের থেকে, নিজের প্রতিষ্ঠানকে একধাপ এগিয়ে রাখতে, লিমিটেড কোম্পানি রেজিষ্টেশন করুন, খুব সহজে, ঘরে বসেই।

সফল ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূণ।

ব্র্যান্ডিং কেনো গুরুত্বপূর্ণ?
Successful Branding সফল ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূণ।

১। আপনার প্রতিষ্ঠানের লোগোটি হতে হবে অর্থবহ। কারণ এই লোগোই আপনার ব্র্যান্ডের চেহারা। এটা দিয়েই ব্র্যান্ডের সাথে মানুষের প্রথম পরিচয়।

২। এরপর আছে ফন্ট! যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ আর পণ্যের জন্য কন্টেন্ট তৈরি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, সেহেতু এইসব কন্টেন্টে যাতে নির্দিষ্ট কয়েকটি ফন্টই ব্যবহার করা হয়। এতে কন্টেন্টের ধারাবাহিকতা থাকে।

৩। কালার স্কিমের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। আপনার পণ্যের কমিউনিকেশনে অবশ্যই নির্দিষ্ট কালার স্কিম থাকা প্রয়োজন। কারণ ব্র্যান্ড মনে রাখার ক্ষেত্রে রঙ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪। এরপর গ্রাফিক স্টাইলিংয়েও নজর দেয়া প্রয়োজন। নির্দিষ্ট স্টাইল পছন্দ করে সেই স্টাইলের ধারাবাহিকতা রাখলেই মানুষ আকৃষ্ট হবে আর ব্র্যান্ড হিসাবে আপনারও একটা আলাদা ইমেজ তৈরি হবে!